মূল পাতা রাজনীতি জাতীয় পার্টি ব্যালটে নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নয় : জিএম কাদের
রহমত নিউজ ডেস্ক 04 April, 2023 03:21 PM
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে ৩০০ আসনেই ব্যালটে নির্বাচন হবে। এটা আমাদের দাবি ছিলো। ব্যালটে নির্বাচন মানেই সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা নয়। এটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি পদক্ষেপ মাত্র। এতদিন যারা নির্বাচন করেছেন তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কী হবে না তা সরকারের ওপর নির্ভর করে। কারা নির্বাচিত হবেন তাও সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করা হয়। এমন ধারণা সাধারণ মানুষের। সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা নিজের আয়ত্তে রেখেই নির্বাচন করছে। যে সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই সরকার যদি নির্বাচন করে তাহলে তাকে কখনোই পরাজিত করা সম্ভব নয়। নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সরকার ক্ষমতায় থেকেও যেনো নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) বিকালে মোহাম্মদপুরের প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম পাঠানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, এসএম ফয়সাল চিশতী, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
জিএম কাদের বলেন, আমরা প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। সিটি কর্পোরেশনে আমরা অংশ নেবো। এতে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা তা আমাদের ধারণা হয়, সাধারণ মানুষও জানতে পারে। একতরফা নির্বাচন হলে বোঝা যায় না নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কিনা। আবার, সরকার বলতে পারে বিরোধীরা নির্বাচনে আসেনি। তাই প্রতিটি নির্বাচনেই আমরা জয়ের জন্য নির্বাচন করছি। আমরা গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। সংবাদ প্রকাশে ভুল হলে তার বিচার হবে। কিন্ত শেষ রাতে ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাবে। দীর্ঘ সময়ে সেই সাংবাদিকের খোঁজ পাওয়া যাবে না তা সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না। প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারতো কিন্ত ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাবে তা কখনোই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। এটি এখন বিচারাধীন বিষয়, তাই এ প্রসঙ্গে আর আলোচনার অবকাশ নেই। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধন দরকার। এভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থাকলে দেশে গণমাধ্যমের কোন ভুমিকা থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ দরিদ্র থেকে হতদরিদ্র হচ্ছে। কিন্ত মুষ্টিমেয় মানুষ ধনী থেকে অতি ধনী হচ্ছে। এটা অবিচার, এর শেষ কোথায় আমরা জানি না। মানুষের আয় বাড়ছে না কিন্ত জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে প্রতিদিন। বেশির ভাগ মানুষ যেন মাটির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে আর একটি গোষ্ঠী মানুষ যেন আকাশে ভাসছে। এমন সমাজ আমরা চাই না। তিনি বলেন স্বর্ণের ভরি হয়েছে এক লক্ষ টাকা। স্বর্ণ ও ডলার সারা বিশ্বে বিক্রি হয়। স্বর্ণের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। যিনি ৫০ হাজার টাকায় এক ভরি স্বর্ণ কিনতে পারতেন তাকে কিনতে হচ্ছে এক লক্ষ টাকায়। এর অর্থ যার আয় পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিলো তার আয় কমে গেছে অর্ধেক। স্বর্ণের ও ডলারের দাম বাড়তে থাকবে। সরকারের হাতে টাকা নেই, ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। রফতানি ব্যয় হচ্ছে আমদানি থেকে আয়ের চেয়ে বেশি। এর সাথে বিভিন্ন প্রকল্পের ঋণ, বিদ্যুতের অনিয়মের ঋণ যোগ হয়ে প্রতিদিন দেশের আয় কমছে। আমাদের দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। সরকার এখন আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এভাবে ডলারের দাম বাড়তে থাকলে মানুষের আয় আরো কমে যাবে। হতদরিদ্র মানুষের না খেয়ে মারা যাবার অবস্থা হতে পারে। সরকার ব্যাংক থেকেও ঋণ করতে পারছে না, ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। কারণ, ব্যাংক থেকে লক্ষ-কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।